ট্রাম্প–পুতিন বৈঠক: শান্তির পথে অচলাবস্থা, অর্থনৈতিক যুদ্ধের হুমকি
আলাস্কা, আগস্ট ২০২৫ — যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সাম্প্রতিক বৈঠককে কেন্দ্র করে বিশ্বজুড়ে ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে। দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর আলাস্কায় অনুষ্ঠিত এই সম্মেলনটি ছিল রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর দুই নেতার মধ্যে প্রথম মুখোমুখি বৈঠক। তবে আলোচনার ফলাফল আশানুরূপ হয়নি, বরং নতুন করে উ
ত্তেজনা ও অনিশ্চয়তা তৈরি করেছে। চুক্তির সম্ভাবনা, কিন্তু বাস্তবায়নে বাধা বৈঠকের আগে ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ দাবি করেছিলেন যে, শান্তিচুক্তি কার্যত প্রায় চূড়ান্ত। তিনি জানিয়েছিলেন, পুতিন একটি নেটো-সদৃশ নিরাপত্তা নিশ্চয়তা মেনে নিতে ইচ্ছুক, যদি ইউক্রেন পূর্বাঞ্চলের কিছু ভূখণ্ড ছাড়তে রাজি হয়। কিন্তু বৈঠকে এসে বিষয়টি স্পষ্ট কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছায়নি। পুতিন তার অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করেন এবং ইউক্রেনের ভূখণ্ড প্রশ্নে ছাড় দিতে রাজি হননি। অন্যদিকে, ট্রাম্পও নির্দিষ্ট কোনো সমাধান দিতে ব্যর্থ হন। ফলে বৈঠক শেষ হয় কোনো চুক্তি ছাড়াই। ট্রাম্পের কড়া সতর্কবার্তা আলোচনার পর ট্রাম্প সাংবাদিকদের জানান, যদি পুতিন শান্তি আলোচনায় অগ্রসর না হন, তাহলে যুক্তরাষ্ট্র রাশিয়ার বিরুদ্ধে “অর্থনৈতিক যুদ্ধ” শুরু করবে। তিনি বলেন: “এটি রাশিয়ার জন্য খুব খারাপ হবে। আমি যা পরিকল্পনা করেছি, তা অত্যন্ত গুরুতর।” এই বক্তব্যে বোঝা যায় যে, ট্রাম্প কূটনৈতিক প্রচেষ্টা ব্যর্থ হলে অর্থনৈতিক চাপ প্রয়োগকে প্রধান হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করতে চাইছেন। কূটনৈতিক জটিলতা ও আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া আলাস্কার বৈঠককে কেন্দ্র করে অনেকেই মনে করেছিলেন, এটি ইউক্রেন যুদ্ধের একটি বড় অগ্রগতি বয়ে আনবে। কিন্তু বাস্তবে এটি নতুন বিভ্রান্তি তৈরি করেছে। ইউরোপীয় মিত্ররাও বিষয়টিকে সন্দেহের চোখে দেখছেন, কারণ ট্রাম্প ও পুতিনের মধ্যে হওয়া আলোচনার কিছু অংশ স্বচ্ছভাবে প্রকাশ করা হয়নি। আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই বৈঠক মূলত “আড়ম্বরপূর্ণ প্রদর্শন” ছাড়া আর কিছু নয়। শান্তির পথে প্রকৃত অগ্রগতি ঘটেনি, বরং অর্থনৈতিক চাপ ও ভূ-রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতাই সামনে আসছে। উপসংহার ট্রাম্প–পুতিন বৈঠক বিশ্বকে আশাবাদী করেছিল, কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা প্রত্যাশিত ফল বয়ে আনতে পারেনি। শান্তিচুক্তির আশা আরও দূরে সরে গেছে এবং রাশিয়ার বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক চাপের হুমকি পরিস্থিতিকে আরও জটিল করতে পারে। ফলে ইউক্রেন যুদ্ধের ভবিষ্যৎ এখনও অনিশ্চিত থেকে গেল।